এই তো দুই দশক আগেও ঘরে ঘরে ছিলো রেডিও। দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ৮-১০টা চ্যানেল। সেগুলোতে শোনা যেত গান, রেডিও নাটক, চিঠিপত্রের অনুষ্ঠান। এখনও মানুষ যে রেডিও শোনেন না তা না, তবে গান ও গল্পগুজবের বাইরে কথাবার্তা এফএম রেডিওতে সামান্যই হয়।
ইন্টারনেটের সাথে পরিচিতি পাওয়ার পরে আস্তে আস্তে ইন্টারনেটই হয়ে উঠলো সকল যোগাযোগ মাধ্যমের বিকল্প। চিঠির বিকল্প হয়ে এলো ইমেইল। টেলিভিশন দেখার চেয়ে নেটফ্লিক্স স্ট্রীম করা আমাদের কাছে ভালো মনে হয়। এই যুগে দেখা মেলে ইন্টারনেট রেডিও-এরও।
পডকাস্ট কিন্তু ইন্টারনেটের যুগের রেডিও না। ইন্টারেনট রেডিও সাধারণ রেডিওর মতই, অর্থাৎ যখন যা প্রচারিত হচ্ছে তাই আপনাকে শুনতে হবে। পডকাস্ট খানিকটা ইউটিউব বা নেটফ্লিক্সের মত ভিডিও স্ট্রীমিং প্লাটফর্মগুলোর মত। পার্থক্য হচ্ছে, এখানে ভিডিওর বদলে অডিও স্ট্রীম করা যায়, যখন খুশি শোনা, এমনকি অফলাইনে শোনার জন্য ডাউনলোডও করা যায়।
পডকাস্ট সাধারণত হয় বিষয়ভিত্তিক। বিষয়টা হতে পারে বিজ্ঞান বা দর্শনের গভীর আলোচনা, কমিকস্ বা গানের ক্রিটিসিজম, এমনকি অনেক টিভি সিরিজের সাথে ‘কম্প্যানিয়ন’ পডকাস্টও থাকে। পডকাস্ট প্রচারিত হয় ধারাবাহিকভাবে, এপিসোড ও সিজনে ভাগ করা।
কীভাবে কাজ করে পডকাস্ট?
পডকাস্টের প্রযুক্তির মূল অংশটা আসলে একটা RSS ফীড। RSS ফীডের সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। ফীড পাবলিশাররা (পত্র-পত্রিকা, বিষয়ভিত্তিক সাময়িকী) তাদের ওয়েবসাইটে ফীড তৈরী করেন। যেখানে লেখা বা কন্টেন্টগুলো কবে বেরিয়েছে, তার শিরোনাম, ডিস্ক্রিপশান, ইত্যাদি দেওয়া থাকে। কখনো কখনো পুরো লেখাটাই ফীড-রিডার থেকে পড়া যায়। আমরা তখন আমাদের ফীড-রিডারে ফীডটিকে যুক্ত করি এবং আমাদের সুবিধামত পড়তে পারি, খেয়াল রাখতে পারি কোনগুলো পড়েছি ও পড়িনি।
পডকাস্টে আসলে লেখা কন্টেন্টের জায়গায় অডিও কন্টেন্ট দিয়ে ফীড তৈরী করা হয়। Pod-catcher সফটওয়্যারগুলো এই ফীডটি থেকে আপনাকে ব্রাউজ করতে, শুনতে, অফলাইনে শোনার জন্য ডাউনলোড করার সুযোগ দেয়।